ঢাকা , বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫ , ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ই-পেপার

ঋণখেলাপিদের দেশ ছাড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মালয়েশিয়া, আমরা পারবো কবে?

দৈনিক মার্তৃভূমির খবর
আপলোড সময় : ১৮-০৩-২০২৫ ০৮:০১:০০ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৮-০৩-২০২৫ ০৮:১৯:২৫ অপরাহ্ন
ঋণখেলাপিদের দেশ ছাড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মালয়েশিয়া, আমরা পারবো কবে? প্রতীকী ছবি

মালয়েশিয়ায় ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশটির ন্যাশনাল হায়ার এডুকেশন ফান্ড কর্পোরেশন (পিটিপিটিএন) থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ ঋণগ্রহীতাদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপের পরিকল্পনা করছে মালয়েশিয়ান সরকার। এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছে দেশটির অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল উম্নোর যুব শাখা।

 

উম্নোর যুব প্রধান দাতুক ড. মুহাম্মদ আকমাল সালেহ জানিয়েছেন, যারা ঋণ পরিশোধ না করেই বিদেশ ভ্রমণে ব্যস্ত, তাদের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা জরুরি। "যদি কেউ বিদেশে ছুটি কাটানোর সামর্থ্য রাখে, তবে ঋণ পরিশোধ করা তাদের জন্য কঠিন হওয়া উচিত নয়," বলে মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল পেরলিস উম্নোর যুবদের এক ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

 

এর আগে, মালয়েশিয়ার উপ-উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী দাতুক মোস্তাফা সাকমুদ দেশটির পার্লামেন্টে (দেওয়ান নেগারা) এক বক্তব্যে জানান, ঋণখেলাপিদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপের বিষয়টি সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। সরকারের মতে, এই পদক্ষেপ ঋণের পরিশোধ হার বাড়াতে সহায়ক হবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তহবিল সংরক্ষণের পথ সুগম করবে।

 

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম পিটিপিটিএনের ঋণ পরিশোধের হার বাড়ানোর লক্ষ্যে ঈদুল ফিতরের পর একটি নতুন নীতিমালা আনার নির্দেশ দিয়েছেন। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, "আমি পিটিপিটিএনের নিম্ন ঋণ পরিশোধের হার পর্যালোচনা করেছি এবং এই তহবিলের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে ভবিষ্যৎ শিক্ষার্থীরাও এর সুবিধা পেতে পারে।"


এর আগে, প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম দেশটির উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন, যেখানে উচ্চশিক্ষার খাতের টেকসই উন্নয়ন ও ঋণ ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

 

মালয়েশিয়ার মতো কঠোর ব্যবস্থা বাংলাদেশেও কতটা কার্যকর করা সম্ভব? বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত বর্তমানে হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপির ভারে জর্জরিত। কিন্তু বারবার আশ্বাসের পরও বড় বড় ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে মাঝে মাঝে ঋণ আদায়ের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্নীতি ও আইনি জটিলতায় তা মুখ থুবড়ে পড়ে।

 

বর্তমানে বাংলাদেশেও দেখা যায়, অনেক ঋণখেলাপি বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে, বিদেশে সম্পদ গড়ছে, কিন্তু দেশে ঋণ পরিশোধ করছে না। তারা বিনা বাধায় দেশত্যাগ করতে পারে এবং নতুন বিনিয়োগের নামে আরও ঋণ নেয়।

 

মালয়েশিয়ার মতো বাংলাদেশেও কি ঋণখেলাপিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া সম্ভব? নাকি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থের কারণেই তারা বারবার পার পেয়ে যাবে? বাংলাদেশের আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। না হলে ভবিষ্যতে ঋণখেলাপির সংখ্যা আরও বাড়বে এবং দেশের অর্থনীতি আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Matribhumir Khobor

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ